প্রশান্ত বারিক
প্রশান্ত বারিকের কবিতা[এক ]
এক এক পথে এসে
দাঁয়ে বাঁয়ে দেখি
কাঁধে হাত রাখার মানুষটা নেই
তাই এক এক পথে এসে শ্বাসকষ্ট হয়
খিঁচ লাগে পায়ের শিরায়
[দুই]
একটা গাছ আকাশ ছাড়িয়ে
চলে গ্যাছে আরো উপরের দিকে
সেই গাছে নানাস্বাদের অমৃতফল
সেইসব ফলের নাগাল
আর পাওয়া যাবেনা কখনও
[ তিন ]
কুয়াশায় দেহ জড়িয়ে যায়
শীত শীত করে -
নুলোপায়ে উঠে আসি পাহাড় চূড়োয়
চারপাশে সাদা আর নীল নিরাকার
ঠোঁট কাঁপে
বরফচাদর এসে ঢেকে দ্যায় আমার
[চার ]
কিছু কথা বলব বলে
আকাশকে দেখলাম
তোমার পাতাচোখে রাতের কান্না লেগে আছে
চারপাশ থেকে মাটিপোড়ার গন্ধ উঠে আসে
নদীর চরায় শুয়েপড়ে চাঁদ
স্মশানের গাছে বাদুড়ের ডানা ঝাপটায়
[পাঁচ ]
রক্তের শীতলতায় কাঁচ ঢুকে গেলে
মাটির গভীরে সাপ আর্তনাদ করে
নাকের পাটায় বিন্দু বিন্দু ঘাম
বেণী দুলিয়ে মেয়েটি হেঁটে আসছিল আলপথ ধরে
পিশাচ-হাত টেনে নিল তাকে
যন্ত্রনায় লাল হল নরম সবুজ
[ছয়]
কতদিন দেখিনি - ছিলেন কোথায় ?
বিস্ময় পাতাহীন শরীরের দিকে চেয়ে
খুঁজলাম তাঁর চোখে মুখ নাক
মন কেমন করা দিনবদলের দিনে
পায়ের তলায় অভ্রকনা লবন ফসফরাস
বেঁচে আছি কি নেই বুঝে নিতে
প্রতিদিন লেপটে থাকি মেট্রোর চাকায়
[সাত ]
ঘূর্ণি হাওয়ায়-
ঘুণপোকার তীরন্দাজী নিশানা
উবু হয়ে বসে আছো কেন?
দুঃখ শুধু তোমারই আছে !
লাদাখের মেয়ে
গান গাইল বরফ সন্ধ্যায়
শুনল চরমীগাইয়ের দল
আমি সেই গানের নদীতে
সব রক্ত নিংড়িয়ে দিই ----
[আট]
কতদিন তোমার কাছে যাইনি
তুমি কি ভুলেছো আমায়
শব্দের সুঁড়িপথে ঘুরতে ঘুরতে
অনেক ডাল -কাদা নুকেলা পাথর
ঝরা পাতায় ভেতর-সরসর-সরসর -
করা সব সরে যায় ---
আমাকে নহরবন্দী করেছে সময় --
[নয়]
বাঁচাতে চেয়েও আমি মোর গেলাম
তোমার পৃথিবী বাঁচতে দিলনা
সহজ কথাটা সহজভাবে বলতে গিয়ে
চারবার হোঁচট খেল কবি লাইট ক্যামেরার সামনে
অথচ টিটকারি বা হাততালি দেওয়ায় জন্য
সেখানে কেউ ছিলনা ----
একটা কাক বহুক্ষণ ধরে ঢাকছে
মহানিমের ডালে -
হয়তবা বিগতজন্মের কথা তার মনে পড়ে গেছে
[দশ]
পিতামহের গন্ধমাখা গাছটির তলায় এসে দাঁড়াই
চারপাশে ধানক্ষেত দূরে দূরে গ্রাম
আলের আড়ালে আড়ালে
রোদ ও বাতাসের লুকোচুরি খেলার রহস্য
এখনও মোছেনি -------
অজগর শেকড়ে মাথারেখে ঘুমিয়ে পড়ার আগে
কন্ঠায় নেমে আসা টাঙ্গির ফলাটিকে
বিস্ময় দেখি -----
সুন্দর লেখা !
ReplyDelete